রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
খবর
জান্নাত-লাভে আমরা দুনিয়ার অনাচারগুলা ত্যাগ করব, ইনশা-আল্লহ!
2019-02-09 22:16:44
মাইদুল ইসলাম

আমরা জান্নাতি মানুষ,আসুন নিজেকে বদলাই।

দুনিয়াতে স্ত্রী সহবাসের চরম মুহূর্তে স্বামী স্ত্রীকে সজোরে চেপে ধরে। এটা জান্নাতেও থাকবে। দুনিয়ার উত্তেজনা চরম রুপ লাভ করে বীর্যপাতের মাধ্যমে। জান্নাতে চরম সুখের সময় মিশকের একটা সুগন্ধি অনুভূত হবে মাত্র। বীর্যপাত বা এর কারণে দূর্বল হওয়া জান্নাতে হবে না।

একবার মিলনের পর দুনিয়াতে স্বামীকে বিশ্রাম নিতে হয়। খুব উত্তেজিত থাকলে পরপর দুবার হয়তো মিলিত হয় স্বাভাবিক অবস্থায়। জান্নাতে এক স্ত্রীর সাথে মিলনের সময়ই অন্যজন আহবান করবে, হে স্বামী! আমরাও আপনার জন্যে, আমাদেরও সময় দিন! এভাবে আহবান চলতেই থাকবে। আহবান করবে কারণ এটা দুনিয়ার সর্বোচ্চ ঘন্টাখানেকের সহবাসের সময় না। আরে, জান্নাতি স্ত্রীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ স্বামী ৪০ বছর তাকিয়েই থাকবে, সুব'হানাল্লহ! মিলনের সময়টাও অনুরপ। তো, অপর স্ত্রীরা চাইবে না কেন? আল্লাহ জান্নাতি পুরুষকে সকল স্ত্রী, হুরদের সন্তুষ্ট করার সক্ষমতা দান করবেন।

কমপক্ষে ৭০ জন হুর থাকবে একেকজন জান্নাতি পুরুষের। দুনিয়ার মধ্য হতে থাকবে ২ জন স্ত্রী। উম্মু সালামা রদ্বিয়াল্লহু তা'আলা আনহা জানতে চান, আমাদের মধ্যে অনেক মহিলার ৪ বিয়েও হয়েছে। তারা তন্মধ্যে কার স্ত্রী হবে? কারণ হল, তখন বিধবা বিয়ের প্রচলন বেশি ছিল, তালাকপ্রাপ্তাকে নিঃসংকোচে বিয়ে করা হত। কোন নারী সাহাবির স্বামী যুদ্ধে শহীদ হলেন, তাঁকে অন্য সাহাবি বিয়ে করে নিলেন। এরপর ঐ সাহাবিও যুদ্ধে বা অসুস্থ হয়ে কিংবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করলেন, এরপর অন্য কোন সাহাবি তাঁকে বিয়ে করলেন। কেউ হয়তো তালাকপ্রাপ্তা হতেন এরপর। এভাবে একাধিক বিয়ে হয়েই যেতো। নবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, স্বামী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জান্নাতি স্ত্রীদের স্বাধীনতা দেয়া হবে। তাঁরা দুনিয়ার জান্নাতপ্রাপ্ত স্বামী হতে যাকে ইচ্ছা গ্রহণ করবেন।

জান্নাতি নারীদের সত্তরটি পাতলা পোশাক পরিধানের পরও তাঁদের পা'র মাংস ভেদ করে অস্থির ভেতরের মগজও দেখা যাবে। এত্ত বেশি সৌন্দর্য।

মনে হতে পারে, এত সুন্দর হুরের তুলনায় দুনিয়ার স্ত্রীরা মনে হয় কিছুই না! রসুলূল্লহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুনিয়ার স্ত্রীরা জান্নাতি হুরদের তুলনায় মর্যাদাবান হবে। কারণ তারা দুনিয়াতে নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, আল্লাহর প্রশংসা করে তথা নেক আমল তাদের হুরদের বিপরীতে অধিক মর্যাদাবান করবে।

উম্মু সালামা রদ্বিয়াল্লহু তা'আলা আনহা কুরআনে বর্ণিত "সমবয়স্কা, প্রেমময়ীদের ব্যাপারে জানতে চান। নবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা দুনিয়ার ঐসব নারী যারা বৃদ্ধাবস্থায় চোখে ছানি, কর্কশ স্বর, মলিন অবস্থায় মারা গিয়েছে। আল্লাহ তাদের অসাধারণ রুপ সৌন্দর্যে প্রেমময়ী করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন!

জান্নাতে হেলান দেয়া অবস্থায় স্ত্রীদের নিয়ে জান্নাতিরা যে বিছানায় অবস্থান করবে, তার উচ্চতা এমন, দুনিয়ার বিছানা তার উপর থেকে ছেড়ে দিলে ১০০ বছর পর্যন্ত পড়তেই থাকবে! আল্লহু আকবার!

চিন্তা করেন অবস্থাটা।
দুনিয়াতে আমাদের কল্পনাতো এমনই, প্রেয়সীকে নিয়ে আকাশের উঁচুতে অবস্থান করব চিন্তাহীনভাবে। আল্লাহ আমাদের কল্পনারও অনেক অধিক দিবেন। ঐ বিছানায় ফলমূলের বৃক্ষগুলা ঝুঁকে থাকবে। কোন পাখি উড়ে যাবে আর জান্নাতি খেতে চাইবে মাত্র পাখিটা রান্না করা অবস্থায় হাজির হবে। কল্পনা করা যায়?

.............

জান্নাতের নি'আমতরাজির কথা পড়লে ইচ্ছা করে, এখনই মারা যাই। মহান রবের নি'আমত-সমূহ উপভোগ করি! তন্ময় হয়ে জান্নাত সংক্রান্ত হাদিসগুলা পড়তেই থাকি, পড়তেই থাকি!

এত্ত এত্ত নি'আমত!
তারপরও আল্লাহ বলেন, আমার কাছে এরচেও অত্যধিক আছে! চাইতে চাইতে, পেতে পেতে আমরা বাকরুদ্ধ পেরেশান হয়ে যাব, আল্লাহর দান শেষ হবে না।

এসব অশেষ নি'আমত পেতে তো জান্নাতের উপযুক্ত হতে হবে।

আমি যদি হস্তমৈথুন, অশ্লীলছবি-মুভি, সমকামিতা, পরকীয়া ইত্যাদি হতে মুক্ত হতে না পারি, জান্নাত তো মিলবে না। এসব অপার নি'আমত , সমবয়স্কা অপরুপ নারী, ক্ষয়হীন যৌবন পাওয়া হবে না। এসব তো আমাকে ত্যাগ করতেই হবে।

জান্নাতি পুরুষকে যখন দুনিয়ার স্ত্রী কষ্ট দেয়, জান্নাতের হুর তখন অভিশাপ দেয়, কেন কষ্ট দিচ্ছিস? ও তো কিছুদিন তোর কাছে আছে মাত্র। অচিরেই আমাদের আরাধ্য আমাদের কাছে চলে আসবে। এমনিতেও জান্নাত হতে হুরেরা তাদের দুনিয়ার জান্নাতি পুরুষ নিয়ে আলোচনা করে।

তো ভাই, যখন পর্ণ দেখছি, যখন হস্তমৈথুন, সমকাম, স্ত্রীর সাথে পায়ুকামের মত জঘন্য গুনাহ করছি; ভাবি আরে! আমার জান্নাতের সঙ্গীরা দেখলে কত লজ্জারই না হবে!

একটা বিষয় মাথায় রাখি।
সর্বোচ্চ সফলতা তথা জান্নাত আমাকে পেতেই হবে। উপরে বলা হয়েছে, দুনিয়ার জান্নাতি স্ত্রীরা একাধিক স্বামী হতে পছন্দের স্বাধীনতা পাবে। তারা কাকে বাছাই করবে জানেন? যারা দুনিয়াতে সদাচার করতো, তাদের!

তো ভাই, মাস্টারবেশন, পর্ণ, সমকাম, পায়ুকাম ইত্যাদি কুকর্মকারীরা কখনও সদাচারী, সদ্ব্যবহারকারী তথা সুন্দর চরিত্রের অধিকারী বলে গণ্য হতে পারে?

তাই এ অভ্যাসগুলা ত্যাগ করি।
আল্লাহ আমাকে জান্নাতের জন্য তৈরী করেছেন। জান্নাতের নি'আমতের মাত্র কিছু বর্ণনা আমরা পড়ে এসেছি। এরচে কত্তো বেশি অপেক্ষা করছে।

 

আমরা জান্নাতি মানুষ।
জান্নাত-লাভে আমরা দুনিয়ার অনাচারগুলা ত্যাগ করব, ইনশা-আল্লহ!